খবরের সময় ডেস্ক:
গাজীপুরের কালিগঞ্জ থানাধীন এলাকায় গত ১৫ অক্টোবর ২০২১ ইং তারিখ দিবাগত রাতে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন পূর্বাচল উপশহরের’সেক্টর২৬,রোড নং-২০২ এর ৫৮ নং ব্রীজ থেকে অনুমান ১০০ গজ দক্ষিণে ফাঁকা জায়গায় রাস্তার উপর ভিকটিম মোঃ সাইফুল
ইসলাম (২৬)’কে অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারী ধারালো ছুরি দিয়ে তার গলা ও পেটে জখম করে ভিকটিমের ইজিবাইক ও
ব্যবহৃত মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন ভিকটিমকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে নিকটস্থ’ হাসপাতালে
প্রেরণকালে পথিমধ্যে সে মারা যায়। পরবর্তীতে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে
লাশ ময়না তদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,গাজীপুরে নিয়ে যায়। বর্ণিত ঘটনায়
ভিকটিমের বড় ভাই মোঃ শাহ আলম (৩৪) বাদী হয়ে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন যার
নম্বর-০৫ তারিখ-১৬/১০/২০২১ ইং উক্ত ঘটনাটি সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি
করে এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হয়। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রেক্ষিতে র্যাব-১ তাৎক্ষনিকভাবে
হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে দ্রুততার সাথে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং
গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
গতকাল ২৩ অক্টোবর ২০২১ ইং তারিখ দিবাগত রাতে র্যাব-১ এর আভিযানিক দল রাজধানীর
উত্তরখান ও গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বর্ণিত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ১)
আজিজুল ইসলাম (১৮),পিতা-আজাহার উদ্দিন, জেলা-গাজীপুর,২) মোঃ ইমন খান (১৯),পিতা-মোঃ সিরাজুল ইসলাম,
জেলা- ঢাকা, ৩) মোঃ মেহেদী হাসান হৃদয় প্রকাশ মাসুম (১৮),পিতা- মোঃ সাত্তার হোসেন, জেলা- ঢাকা, ৪) বিজয়
আহম্মেদ (১৯),পিতা- মোঃ জয়নাল আবেদীন, জেলা- ঢাকা,৫) আলাউদ্দিন (৩০), পিতা- মৃত আপিল উদ্দিন, জেলা-ঢাকা
এবং ৬) মোঃ আরজু মিয়া (৩৩),পিতা- মোঃ সমর আলী, জেলা-গাজীপুর’দেরকে আটক করে। এ সময় ধৃত ব্যক্তিদের নিকট
হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ০১ টি ছুরি, ছিনতাইকৃত ০১ টি ইজিবাইক এবং ভিকটিমের ব্যবহৃত ০১ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার
করা হয়। ধৃত ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বর্ণিত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা জানায়।
র্যাব জানায় আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়,গত ১৫ অক্টোবর ২০২১ ইং তারিখ বিকালে ধৃত আসামী মোঃ
আজিজুল ইসলাম, ইমন ও পলাতক আসামী জুয়েল অটোরিক্সা চালকের হাত-পা বেঁধে ও মুখে কচটেপ লাগিয়ে ইজিবাইক
ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের সহযোগী বিজয় ও হৃদয় প্রকাশ মাসুমকে ফোন করে
ডিএমপি, ঢাকার উত্তরখান থানাধীন ময়নারটেক এলাকায় আসতে বলে। ফাঁকা জায়গায় পৌছালে চালক ভিকটিম মোঃ সাইফুল ইসলামের গলায় পোচ দেয়,ফলে সে নিচে পড়ে যায়। পরবর্তীতে আজিজুল তার কাছে থাকা ছুরি দিয়ে এবং ইমন জুয়েলের ছুরি নিয়ে ভিকটিমের
শরীরের পিছনে দুইটি করে পোচ দেয়। এতে ভিকটিম গুরুতর আহত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়লে জুয়েল ভিকটিমের
ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে নেয় ও ইমন অটো রিক্সাটি চালিয়ে গাজীপুরের পুবাইল মিরের বাজারে দিকে পালিয়ে যায়।
ধৃত আসামীদের আরো জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়,তারা একটি সংঘবদ্ধ অটোরিক্সা ছিনতাই চক্রের সক্রিয় সদস্য।
এই সংঘবদ্ধ ছিনতাই চক্রের সদস্য ১০/১২ জন। ধৃত আসামী আলাউদ্দিন এই ছিনতাই চক্রের মূল হোতা। সে এই
ছিনতাই চক্রটিকে নিয়ন্ত্রণ করত। এই চক্রের অপর সদস্য ধৃত অপর আসামী আজিজুল ও আরজু ছিনতাইকৃত ইজিবাইক
এবং অন্যান্য মালামাল বিক্রয় করে থাকে। তারা একে অপরের যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন এলাকায় ইজিবাইক,
অটোরিক্সা,প্রাইভেটকার ছিনতাই করে আসছিল মর্মে স্বীকার করে।